ভান্ডারিয়া প্রতিবেদক ॥ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিচলিত বিশ্বের অন্যতম সম্পদশীল দেশগুলো। আর দরিদ্রতম দেশগুলোর অনিশ্চয়তার সম্মুখীন কখন কি হয়? নেই পর্যাপ্ত হাসপাতাল, চিকিৎসক, নার্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভেন্টিলেটারসহ চিকিৎসা সামগ্রী। ফলে হতাশাগ্রস্থ মানুষ অনেকটা গোপনিয়ভাবেই নিজেদের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর ফলে করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
এমনই একটি পরিবারের খোঁজ মিলেছে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার লিয়াকত মার্কেট সংলগ্ন বেপারী বাড়িতে। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে নমুনা সংগ্রহের জন্য মেডিকেল টিম গেলেও তারা কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে রাজী হননি। ফলে শুধুমাত্র ওই বাড়িটিকে লকডাউন করেই চলে যেতে হয়েছে মেডিকেল টিমকে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘ওই এলাকার থানা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মেহেদী হাসান কুদ্দুস এর মা এবং ভাই গত সাত দিন পূর্বে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন। ঢাকায় তারা যে বাড়িতে ছিলেন সেই বাসার প্রতিটি সদস্য করোনা আক্রান্ত ছিলেন।
এমন খবরে উপজেলার মেডিকেল টিম ওই পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহের জন্য বাড়িতে যান। কিন্তু পরিবারের কোন সদস্যই পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহে সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেছেন মেডিকেল টিমের স্বেচ্ছাসেবক প্রধান মো. তুহিন তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোন প্রকার সহায়তা বা পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য আসিনি। শুধুমাত্র নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করে তারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা নমুনা দিতে অস্বীকার করেন। এদিকে করোনা আক্রান্ত পরিবার থেকে আসা ওই সদস্যরা তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে অস্বীকৃতি জানানোয় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ আর হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ভীতিকর পরিস্থিতি।
স্থানীয়রা বলছে, ওই পরিবারের সদস্যরা ঢাকা থেকে ফিরে গোপনিয়ভাবেই নিজেদের চিকিৎসা করছেন। তবে তাদের পরিবারের সদস্যরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করোনা সংক্রান্ত যেসব ওষুধ বাজারে প্রচলিত রয়েছে তার বেশীরভাগ ওষুধ ফার্মেসি গুলো থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে গোপনে চিকিৎসার জন্য বাড়িতে ওষুধ মজুদকেই দায়ি করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে অতিরিক্ত সার্থকতার জন্য দেশ সংকটে পড়ার আশঙ্কাও করছেন তারা। উপজেলার ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আবুল হোসেন বলেন, পরিবারিকভাবে ওষুধ মজিদ করার কারণে সংকটের সৃষ্টি হতে পারে। তবে আমরা প্রতিটি ওষুধ ব্যবসায়ীকে বিষয়টি মনিটরিং করতে বলেছি। সেই সাথে ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোন ওষুধ বিক্রি না করার আহ্বান জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
Leave a Reply